,

পৃথিবীর দিকে আসা অনিয়ন্ত্রিত রকেট নিয়ে যা বলছে চীন

সময় ডেস্ক ॥ অনিয়ন্ত্রিত গতিতে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসা চীনের বৃহত্তম রকেট লং মার্চ ৫-বি এর টুকরোটির গতিপথ পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে অ্যারোস্পেস ডট অর্গ রকেটটি ট্র্যাক করেছে।এটি ৮ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে। তবে এর সময় পরিবর্তনও হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম পিপলস ডেইলির ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে পশ্চিমা দেশগুলো রকেটটি ‘অনিয়ন্ত্রিত’ এবং এর কারণে ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে এমন ‘অহেতুক প্রচারণা’ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে। মহাকাশখাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ঊদ্ধৃত করে তারা বলছে, পরিস্থিতি মোটেই আতঙ্কিত হওয়া মতো নয়। অ্যারোস্পেস নলেজ ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক ওয়াং ইয়ানান বলেছেন, এর বেশিরভাগ অংশই পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশের সময়ই পুড়ে যাবে; খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ ভূমিতে, মানুষের কার্যকলাপ থেকে অনেক দূরে কোনো এলাকায় বা সমুদ্রে পড়তে পারে। হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের সদস্য ম্যাকডোয়েল বলেছেন, পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশের পর রকেটের ২১ টন ওজনের অংশটি টুকরো টুকরো হয়ে এমনভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়তে পারে, যেমনটা ছোট বিমান দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দেখা যায়। ১০০ মাইল এলাকাজুড়ে ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় এসব টুকরো পাওয়া যেতে পারে। কক্ষপথে এখনকার অবস্থান অনুযায়ী রকেটটির ধ্বংসাবশেষ উত্তরের নিউ ইয়র্ক থেকে শুরু করে মাদ্রিদ, বেইজিং এমনকী দক্ষিণের চিলি বা নিউ জিল্যান্ডের ওয়েলিংটনে বা এর মাঝামাঝি যে কোনো জায়গায় পড়তে পারে, ধারণা ম্যাকডোয়েলের। গত ২৯ এপ্রিল ‘লং মার্চ ৫বি’ নামের রকেটটি চীনের হাইনান দ্বীপ থেকে তিয়ানহে মডিউল নিয়ে পৃথিবীর কক্ষপথের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তিয়ানহে মডিউল চীনের নির্মাণাধীন স্থায়ী মহাকাশ স্টেশনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্টেশনটির তিন ক্রুর বসবাসের কোয়ার্টার এই মডিউলটিতে করেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের জন্য কক্ষপথে মোট ১১টি মিশন পরিচালনা করবে চীন। এর প্রথমটিতেই ‘লং মার্চ ৫বি’ রকেটে করে তিয়ানহে মডিউল কক্ষপথে পাঠানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের কয়েক ঘণ্টা আগ পর্যন্ত এটা বলা সম্ভব হবে না যে ঠিক কোন অংশ দিয়ে এট পৃথিবীতে প্রবেশ করবে। তবে এর ট্র্যাকিংয়ের আপডেট ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেওয়া হবে। এদিকে এটা পৃথিবীর কোথায় আছড়ে পড়বে তা জানা না গেলেও এই অংশটি কোনো মহাসাগর বা নির্জন এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে বলে মনে করেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্ট্রোফিজিক্স সেন্টারের একজন অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট জনাথন ম্যাকডোয়েল। এর আগে ২০২০ সালের মে মাসে চীনের আরেকটি ‘লং মার্চ ৫বি’ রকেটের খণ্ডাংশ আইভরি কোস্টে পড়েছিল; তখন কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাতে কেউই আঘাত পায়নি বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন ম্যাকডোয়েল। ১৯৭৯ সালের জুলাইয়ে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মহাকাশ স্টেশন স্কাইল্যাবের বড় একটি খণ্ড অস্ট্রেলিয়ায় আছড়ে পড়ার পর থেকে বেশিরভাগ দেশই তাদের মহাকাশযানের নকশা এমনভাবে করে যেন বড় ধরনের অনিয়ন্ত্রিত পুনঃপ্রবেশ এড়ানো যায়।


     এই বিভাগের আরো খবর